রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ অপরাহ্ন
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বরিশালে আকাশ সকাল থেকে মেঘলা রয়েছে। আর হঠাৎ হঠাৎ দমকা হাওয়াও বয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাতও হচ্ছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানায়, বরিশালে বাতাসের স্বাভাবিক গতিবেগ ঘন্টায় রয়েছে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার, তবে মাঝে মাঝে সর্বোচ্চ গতিবেগ ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠছে।
আর আজ বুধবার (২০ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত গেলো ২৪ ঘন্টায় ৪৯ দশমিক ০৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। অপরদিকে রাতে বৃষ্টিপাতের কারণে সকাল থেকে গরম কিছুটা কমেছে।
এদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় গতরাতে ১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ এবং বিভাগীয় প্রশাসন সূত্র জানায় বিভাগে ১০ লাখ ৬৫ হাজার জন মানুষ আশ্রয় গ্রহন করেছিলো। তবে ঘুর্নিঝড় আম্পান আঘাত হানতে বিলম্ব হওয়ার খবরে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের মধ্যে অনেকেই বুধবার সকালে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।
তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে দ্রুত তারা আবার আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরবে বলে জানিয়েছেন ঘুর্নিঝড় প্রস্তুত কর্মসূচীর (সিপিপি) উপপরিপালক মোঃ আব্দুর রশিদ।
তিনি বলেন, বরিশালে তেমন একটা বাতাস বা বৈরি আবহাওয়া না থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে যারা এসেছেন তাদের বাড়িঘর আশপাশে হওয়ায় অনেকেই সকালে বাড়ি গেছেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে তারা ফিরে আসবেন। তবে বাড়িতে চলে যাওয়া মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এদিকে ১০নং মহা বিপদ সংকেতের খবর ভোর থেকেই মেগাফোনে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে প্রচার করছে সিপিপি ও রেডক্রিসেন্টের কর্মীরা।
উল্লেখ্য গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে রাত ১০ টার পর থেকে গোটা বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে রাতে বৃষ্টি হওয়ার খবর জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে গোটা বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাগর ও নদী তীরবর্তী এলাকাসহ সম্ভাব্য ঝুকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রম এখনো চালানো হচ্ছে।
ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালীসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার উপকূলীয় এলাকায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার কার্যক্রম চলমান রাখার পাশাপাশি সোমবার থেকে সাধারণ মানুষকে ঘুর্ণিঝড়ে বিষয়ে সতর্ক করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিপিপি বরিশালের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রশিদ।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় বরিশালের ৬ জেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি জেলাতেই অবস্থান বুঝে বাড়ানো হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা। গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম এবং উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এছাড়া সাগর ও নদী তীরবর্তী এলাকাসহ উপকূলীয় সম্ভাব্য ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের সচেতন করতে সিপিপি, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যবৃন্দ এবং স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়ের লক্ষ্যে আশ্রায়ন কেন্দ্র হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে খোলা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের প্রাক্কালে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সার্বক্ষনিক চাবিসহ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের সময় জরুরী প্রয়োজনে বোর্ডের কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান।